কালোজিরা ও তেঁতুলে রয়েছে যে সকল উপাদান

 

কালিজিরা

 

 

কথায় আছে যে, সব রোগের মহা ঔষধ কালিজিরা, জেনে নেই কালিজিরার স্বাস্থ্যগুন।

 

১. অরুচি, উদরাময়, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, মাইগ্রেন, চুলপড়া, সর্দি, কাশি, হাঁপানি নিরাময়ে কালিজিরা সহায়তা করে। ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবে কালিজিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

 

২. চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্কিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি, মস্তিষ্কশক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়াতেও কালিজিরা উপকারী।

 

৩. মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তি স্থানে দৈনিক ৩/৪ বার কালিজিরা তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।

 

৪. কালিজিরা চূর্ণ ও ডালিমের খোসাচূর্ণ মিশ্রন, কালিজিরা তেল ডায়াবেটিসে উপকারী।

 

৫. চায়ের সাথে নিয়মিত কালিজিরা মিশিয়ে অথবা এর তেল বা আরক মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগে যেমন উপকার হয়, তেমনি মেদ ও বিগলিত হয়।

 

৬. মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালিজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল রোগ মহামারী হতে রক্ষা পাওয়া যায়।

 

৭. জ্বর, কফ, গায়ের ব্যথা দূর করার জন্য কালিজিরা যথেষ্ট উপকারী বন্ধু। এতে রয়েছে ক্ষুধা বাড়ানোর উপাদান। পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে ক্ষুধা বাড়ায়।

 

৮. সন্তান প্রসবের পর কাঁচা কালিজিরা পিষে খেলে শিশু দুধ খেতে পাবে বেশি পরিমাণে।

 

৯. কালিজিরায় রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোরিয়াল- এজেন্ট, অর্থাৎ শরীরের রোগ-জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এই উপাদানের জন্য শরীরে সহজে ঘা, ফোড়া, সংক্রামক রোগ বা ছোঁয়াচে রোগ হয় না।

 

১০. কালিজিরা মেধার বিকাশের জন্য কাজ করে দ্বিগুণ হারে। কালিজিরা নিজেই একটি অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিসেপটিক।

 

১১ . দাঁতে ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালিজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে; জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু ধ্বংশ করে।

 

১২ . কালিজিরা কৃমি দূর করার জন্য কাজ করে।

 

১৩. দেহের কাটা-ছেঁড়া শুকানোর জন্য কাজ করে। তিলের তেলের সাথে কালিজিরা বাঁটা বা কালিজিরার তেল মিশিয়ে ফোড়াতে লাগালে ফোড়ার উপশম হয়।

 

১৪. কালিজিরার যথাযথ ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনে বাড়তি শক্তি অজির্ত হয়। এর তেল ব্যবহারে রাতভর প্রশান্তিপূর্ণ নিদ্রা হয়।

 

১৫. প্রস্রাব বৃদ্ধির জন্য কালিজিরা খাওয়া হয়।

 

১৬. বহুমুত্র রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং নিম্ন রক্তচাপকে বৃদ্ধি করে ও উচ্চ রক্তচাপকে হ্রাস করে।

 

১৭. মস্তিস্কের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণ শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

 

তেঁতুল

 

 

তেঁতুল আমাদের দেশের বসন্তকালের টকজাতীয় ফল হলেও সারা বছর পাওয়া যায়। অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বরং তেঁতুলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ভেষজ গুণ। তেঁতুল দেহে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুব উপকারী। তেঁতুল দিয়ে কবিরাজি, আয়ূর্বেদীয়, হোমিও ও এলোপ্যাথিক ঔষধ তৈরি করা হয়। পাকা তেঁতুলে মোট খনিজ পদার্থ সব ফলের চেয়ে অনেক বেশি।

 

তেঁতুলে খাদ্যশক্তির পরিমাণ নারিকেল ও খেজুর ছাড়া সব ফলের চেয়ে অনেক বেশি। তেঁতুলে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি আছে। অন্যান্য পুষ্টি উপাদান স্বাভাবিক পরিমাণে আছে, এ তেঁতুল যেসব রোগের জন্য উপকারী তা হলো স্কার্ভি রোগ, কোষ্ঠবদ্ধতা, শরীর জ্বালা করা প্রভৃতি রোগে তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী। তেঁতুল রক্তের কোলস্টেরল কমায়, মেদভুঁড়ি কমায় ও পেটে গ্যাস হলে তেঁতুলের শরবত খেলে ভালো হয়। তেঁতুল খেলে কোনো ক্ষতি হয় না। তবে বেশি খেলে রক্তের চাপ কমে যেতে পারে। নিচে প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী তেঁতুলে বিদ্যমান পুষ্টিমান উল্লেখ করা হলো।

 

পুষ্টি উপাদান ঃ- পাকা তেঁতুল, কাঁচা তেঁতুল ও বিলাতি তেঁতুল

 

১। জলীয় অংশ (গ্রাম) - ২০.৯, ৮৩.৬, ৭৯.২

 

২। মোট খনিজ পদার্থ (গ্রাম) - ২.৯ , ১.২, ০.৭

 

৩। আঁশ (গ্রাম) - ৫.৬ –১.০

 

৪। খাদ্যশক্তি (কিলোক্যালরি) - ২৮৩, ৬২ , ৭৮

 

৫। আমিষ (গ্রাম) - ৩.১ ১ - ১ ২.৭

 

৬। চর্বি (গ্রাম) - ০.১ ০ - ২ .০৪

 

৭। শর্করা (গ্রাম) - ৬৬, ৪ ১৩, ৯ ১৬

 

৮। ক্যালসিয়াম (মিলিগ্রাম) - ১৭০, ২৪ , ১৪

 

৯। আয়রন (মিলিগ্রাম) - ১০.৯ – ১.০

 

১০। ক্যারোটিন (মাইক্রোগ্রাম) - ৬০

 

১১। ভিটামিন বি১ (মিলিগ্রাম) – ০.০১ - ০.২২

 

১২। ভিটামিন বি ২ (মিলিগ্রাম) - ০.০৭, ০.০২ , ০.০৩

 

১৩। ভিটামিন সি (মিলিগ্রাম) - ৩, ,৬, ১০৮

 

তথ্য থেকে দেখা যায় পাকা তেঁতুল সবচেয়ে বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ। তবে এই পুষ্টিমান তেঁতুলের উৎপাদনের স্থান, জাত ও জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। আরও রয়েছে -

 

১। পাকা তেঁতুল কফ ও বায়ুনাশক, খিদে বাড়ায় ও উষ্ণবীর্য হয়। তেঁতুল গাছের ছাল, ফুল, পাতা, বিচি ও ফল সবই ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তেঁতুল বীজের শাঁস পুরনো পেটের অসুখে উপকারী। তেঁতুল পাতার রস কৃমিনাশক ও চোখ ওঠা সারায়। মুখে ঘা বা ক্ষত হলে পাকা তেঁতুল জলে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।

 

২। বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা ও রক্তের প্রকোপে তেঁতুল উপকারী। কাঁচা তেঁতুল বায়ুনাশক। কাঁচা তেঁতুল গরম করে আঘাত পাওয়া স্থানে প্রলেপ দিলে ব্যথা সারে। তেঁতুল গাছের শুকনো বাকলের প্রলেপ,ক্ষতস্থানে লাগালে তা ভালো হয়। পুরনো তেঁতুল খেলে আমাশয়, কোষ্ঠবদ্ধতা ও পেট গরমে উপকার পাওয়া যায়। পুরনো তেঁতুল খেলে কাশি সারে পাশাপাশি তেঁতুলের শরবত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments
Sayra - Jun 30, 2022, 12:45 PM - Add Reply

Nice

You must be logged in to post a comment.
Aziber - Jun 30, 2022, 12:50 PM - Add Reply

Great post

You must be logged in to post a comment.
Sohan - Jun 30, 2022, 12:53 PM - Add Reply

Nice

You must be logged in to post a comment.
F hossain - Jun 30, 2022, 7:01 PM - Add Reply

Helpful post

You must be logged in to post a comment.
Mozam - Jul 1, 2022, 4:26 PM - Add Reply

Agreeable post

You must be logged in to post a comment.

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
About Author
Recent Articles
Dec 16, 2023, 8:16 PM allsharehd
Dec 13, 2023, 7:33 PM allsharehd
Jun 4, 2023, 8:43 PM allsharehd
May 1, 2023, 1:50 AM মোহাম্মদ রিদুয়ান